বাক প্রতিবন্ধী মানুষের বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন তরুণ উদ্ভাবক সাফায়েত আহমেদ। বিস্ময়কর হলেও সত্য তাঁর আবিষ্কৃত “স্পিক আপ” নামের যন্ত্রটি বাক প্রতিবন্ধী একজন মানুষের হয়ে কথা বলতে পারে। যোগাযোগের গভীর সমস্যার কারণে বাক প্রতিবন্ধীদের প্রায়শই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এ থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে সাফায়েতের অনন্য যন্ত্রটি।
বাক প্রতিবন্ধী একজন মানুষের কণ্ঠে ভাষার উচ্চারণ নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠতম একটি অভিজ্ঞতা। তরুণ উদ্ভাবক সাফায়েত আহমেদ চেয়েছিলেন যুগান্তকারী এই আবিষ্কারের মাধ্যমে অবহেলিত বাক প্রতিবন্ধীদের কণ্ঠস্বর ফিরিয়ে দিতে। এজন্য উদ্ভাবন করলেন “স্পিক আপ” যা একজন বাক প্রতিবন্ধী মানুষের করা “সাইন ল্যাংগুয়েজ” কে শব্দে পরিবর্তিত করে মানবিক যোগাযোগকে নিয়ে যাবে এক নতুন উচ্চতায়। আমাদের দেশে অধিকাংশ বাক প্রতিবন্ধী মানুষ যোগাযোগের জন্য “আমেরিকান সাইন ল্যাংগুয়েজ” ব্যবহার করে থাকে। যা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া সাধারণ মানুষের পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। ফলে ঘরের বাইরে বাক প্রতিবন্ধী মানুষকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। “স্পিক আপ” এর মাধ্যমে একজন বাক প্রতিবন্ধীর করা সাইন ল্যাংগুয়েজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত হবে কণ্ঠ ভাষায়। যন্ত্রটির সাথে থাকা স্পিকারের মাধ্যমে তা কথ্য ভাষা হয়ে বেড়িয়ে আসবে। ফলে “আমেরিকান সাইন ল্যাংগুয়েজ” না জানা একজন ব্যক্তিও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের কথা বুঝতে পারবেন ও স্বচ্ছন্দে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। যন্ত্রটিতে একটি এলসিডি পর্দাও যুক্ত আছে যার মাধ্যমে শ্রবণ প্রতিবন্ধীরাও সাংকেতিক ভাষা ব্যবহারকারী মানুষটির কথা বুঝতে পারবেন। এছাড়া ব্যবহারকারী যন্ত্রটিতে নতুন নতুন সাংকেতিক ভাষা অর্থসহ যুক্ত করতে পারবেন। বহনযোগ্য হওয়ায় যন্ত্রটি সবখানে নিয়ে যাওয়া যাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হলো যন্ত্রটির মূল্যও খুব বেশি নয়। ফলে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে যন্ত্রটি।
বাক প্রতিবন্ধী একজন মানুষের সাথে যোগাযোগের জন্য “স্পিক আপ” একটি অসামান্য উদ্যোগ। এর মাধ্যমে কেবল বাক প্রতিবন্ধী মানুষের সাথে সাধারণ মানুষের যোগাযোগই সহজ হবে না বরং প্রতিবন্ধী একজন মানুষের যথাযথ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও সহজতর হবে। ফলে তাঁরা আত্মনির্ভরশীলতার পথে একধাপ এগিয়ে যাবেন। এভাবে সমাজের সামনের কাতারে আসন লাভের সুযোগ সৃষ্টি হবে তাঁদের জন্য। উদ্ভাবক সাফায়েত এজন্য একখানা টুপিখোলা অভিবাদন লাভ করতেই পারেন।
সাফায়েত আহমেদ
বিএসসি (ইইই)
গ্রাম – দৌলতপুর
পোস্ট – পাক মুসির হাট
নোয়াখালি