যেকোন সমাজ বা রাষ্ট্রের যুবরাই প্রধান শক্তি। তাঁরা পরিবারের প্রধান চালিকা শক্তি, একই সাথে গ্রাম উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি। এই শক্তিকে কাজে লাগাতেই যাত্রা শুরু করে ‘যুব মুক্তি সংগঠন’। চট্টগ্রাম জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম কুমিরায় এই সংগঠনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে যুব মুক্তি আন্দোলন। একটি আলোকিত এবং স্বনির্ভর গ্রাম গড়ে তোলাই যাদের মূল লক্ষ্য।
অশিক্ষা আমাদের সমাজের অন্যতম প্রধান সমস্যা। শুধু এই কারণেই গ্রামের অধিকাংশ যুবক শিক্ষার আলো থেকে যেমন বঞ্চিত তেমনি জীবন গড়ে তোলার অন্তর্নিহিত মানসিক শক্তি থেকেও বঞ্চিত। কুমিরা গ্রামের কয়েকজন শিক্ষিত যুবক উদ্যোগ নিলেন গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবেন এই প্রত্যয়ে। গড়ে তুললেন নতুন এক আলোর ঠিকানা, নাম দিলেন ‘যুব মুক্তি সংগঠন’। এই আলো ছড়িয়ে যেতে লাগলো, একই সাথে সংগঠনে যোগ হতে লাগল গ্রামের যুবকরা। কিছুদিনের মধ্যেই ৪০ জনের এক বড় পরিবার হয়ে গেল ‘যুব মুক্তি সংগঠন’। তাঁরা হাতে নিল কর্মপরিকল্পনা, প্রথম লক্ষ্যটাই ছিল, গ্রামের অশিক্ষিত গরীব পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করা। স্থির করা হল, ২০১৫ সালের মধ্যেই গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয় মুখি করা। পাশাপাশি তাঁদের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। সংগঠনের এই উদ্যোগ ও নিরলস পরিশ্রম গ্রামের প্রতিটি মানুষকে আন্দোলিত করল। সংগঠনের গৃহীত উদ্যোগ ক্রমান্বয়ে আলোর মুখ দেখতে শুরু করল। শিক্ষা আন্দোলনের সাথেই সংগঠন গ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে অংশ নিল। গ্রামের অসহায় জেলে পরিবারের সাহায্যে তাঁরা এগিয়ে এল, এবং তাঁদের জন্য ব্যবস্থা করা হল প্রশিক্ষণের। এই জেলে পরিবারগুলো মাছ ধরা মৌসুম ব্যতিত অন্যসময় বেকার সময় অতিবাহিত করত, যুব মুক্তি সংগঠন তাঁদের বেকারত্ব দুরকরণে ব্যবস্থা করলো আত্মকর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণের।
২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ‘যুব মুক্তি সংগঠন’। গ্রামের ছেলেমেয়েদের শত ভাগ শিক্ষিত করে তোলার যে স্বপ্ন, এই একবছরেই তা অর্জিত হয়েছে। কুমিরা আজ যুব মুক্তির ছড়িয়ে দেয়া আলোয় আলোকিত। যুবকরা স্বনির্ভর হয়েছে, গরীব দুঃখী মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন হয়েছে। এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে যুব মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে গ্রামের সবাইকে একত্রিত করার মাধ্যমে।